পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের অধিকারের অবদানঃ পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের অধিকারের অবদানঃ
অধিকার ও কর্তব্য একটি অপরটির সাথে ঘনিষ্ট
ভাবে জড়িত । অধিকার হল- যা অন্যের কাছ থেকে পেয়ে থাকি বা পাওনা । আবার কর্তব্য
হল- যা অন্যের প্রতি করে থাকি বা করা উচিত বলে মনে করি । একটি ছাড়া অপরটি মূল্যহীন
বা অনর্থক । যেমন ভাল ছাড়া মন্দ , দিন ছাড়া রাত কিম্বা আদর ছাড়া অনাদর ইত্যাদি। প্রত্যেক
পিতা-মাতা তার সন্তানের মঙ্গলের জন্য অনেক কিছু করেন। এমনকি নিজের জীবন পর্যন্ত বিসর্জন
দিতে কণ্ঠাবোধ করেন না । কিন্তু বিপরীতে দেখা যায় এর অনেক ব্যতিক্রম। প্রত্যেক সন্তানেরা
৩-৫ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ যখন তারা অসহায় কিম্বা পিতা-মাতা ছাড়া আর কাউকে তার পাশে দেখে
না কিম্বা তার খাবার খাওয়ান না, তখন তারা তাদের পিতা-মাতার কথা মেনে চলে। পরে অবশ্য
অনেকেই তাদের পাশে আসে কিম্বা মনের মত করে খাবার খাওয়ান ফলে তারা আসল স্বভাব ছেড়ে চলে
অন্য স্বভাবে । কিন্তু পিতা-মাতার সেই স্বভাব তো কোন দিন পরিবর্তন হয় না । কারন সন্তান
বুড়ো হলে ও তারা বলে না বুড়ো, বলে আমার ছওল
, সন্তান বা ছেলে কিম্বা মেয়ে। অবশ্য এর কিছু ব্যতিক্রম ও সমাজে লক্ষ্য করা যায় , তবে
সেটা সংখ্যায় খুবই সীমিত । কিন্তু পিতা-মাতা
সময়ের সাথে বা বৃদ্ধ হলে ও তারা এ রকম রূঢ়
আচরন দেখা যায় না যা আমরা তাদের প্রতি করে থাকি। কারন পিতা-মাতা বৃদ্ধ বয়সে
বেশী টাকা পয়সা নিতে চায় না । তারা চায় একটু সূখ-শান্তিতে বাঁচতে ও তাদের সন্তানদের
(ছেলে-মেয়েদের) সূখ-শান্তি দেখতে । কিন্তু কোথায় তাদের সেই আশা-আকাঙ্ক্ষার বানী ? অথচ
প্রকৃতি দিকে লক্ষ্য করলে এ সব ব্যতিক্রম আমাদের চোখে ধরা পড়ে না। প্রকৃতি তার আপন
মহিমায় অপরেরর জন্য তার সুন্দর্য্য বিলিয়ে চলে। এখানে একটা পার্থক্য – পিতা-মাতার লোভ-লালসা
আছে, কিন্তু প্রকৃতির কোন লোভ-লালসা নেই । আপাততঃ দৃষ্টিতে মনে হলে ও তা মোটেই সত্য
নয়। কেননা পিতা-মাতা তাদের ভূমিষ্ট নব জাতক ঐ শিশুর কাছ থেকে কি আশা করে ? যখন সে কিছুই
করতে পারে না । একজন অন্ধ, বধির ও দৃষ্টিহীন সন্তানকে মেরে ফেলতে ও নারাজ । তারা যখন
ব্যাধর্কে উপনীত হয় তখন কিছুটা সেবা নিতে বা
পেতে চায় । এটাই তাদের বড় অধিকার কিম্বা চাওয়া ও পাওয়া । তাদের এই অধিকারটি কি অযৌতিক
? আমাদের চোখে সমাজের অনেক ঘটনায় অহরহ ঘটে থাকে । কিন্তু যেগুলো
আমাদের দৃষ্টি আর্কষন করে তা সম্পর্কে
কিছু বলা , করা বা অনুধাবন করা মোটেই অযৌতিক নয় । পিতা-মাতার ভালোর
উদ্দেশ্যে ও এই অধিকার টুকু পালনের জন্য অনেক সন্তানই তাদের পিতামাতাকে অসহায়
অবস্থায় রেখে বাড়ি থেকে অনেক দূরে (বিদেশে) গিয়ে কঠোর পরিশ্রম অর্থ উপার্জন করে তাদের
(পিতা-মাতার)পিছুনে ব্যয় করে থাকেন। পিতা-মাতা খুশির জন্য তাদের এই বিদেশ গমন বা
আত্মগোপন, না তাদের পাশে থেকে দু’মুঠো লবন-ভাত খাওয়ানোর ব্যাপারটা কতোটুকু শ্রেয়
তা-ই ভাবার বিষয় ।
No comments: